মঙ্গলবার, ১৫ মে, ২০১২

শাবির ৩ বিভাগীয় প্রধানের পদত্যাগ

শাবির ৩ বিভাগীয় প্রধানের পদত্যাগ

শাবির ৩ বিভাগীয় প্রধানের পদত্যাগ

লেখক: শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি  |  মঙ্গলবার, ১৫ মে ২০১২, ১ জ্যৈষ্ঠ ১৪১৯
Details
সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩ জন বিভাগীয় প্রধান পদত্যাগ করেছেন। আজ মঙ্গলবার বিকেল ৪টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ফলিত বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি অনুষদের ডিনের মাধ্যমে রেজিষ্টার বরাবর এ পদত্যাগ পত্র জমা দেন। পদত্যাকারী বিভাগীয় প্রধানরা হলেন, সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড এনভায়রুনমেন্ট সায়েন্স বিভাগের বিভাগীয় প্রধান, কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড পলিমার সায়েন্স বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ড. আখতারুল ইসলাম,  ও স্থাপত্য বিদ্যা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান মো: মুস্তাফিজুর রহমান। ফলিত বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. আকতারুল ইসলাম চৌধুরী পদত্যাগের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। সামাজিক বিজ্ঞান, ভৌত বজ্ঞান, পদার্থ বিজ্ঞান ও ব্যবসা প্রশাসন অনুষদের প্রভাষকদের জন্য পদোন্নতিতে  সিন্ডিকেটে বিশেষ সংযুক্তি করায় বাতল না করায় তারা পদত্যাগ করেছেন বলে জানা গেছে।
পদত্যাগের কারণ জানতে চাইলে কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড পলিমার সায়েন্স বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ড. আখতারুল ইসলাম বলেন, অনুষদের শিক্ষকদের অব্যাহত আন্দোলনে বিভাগের সকল কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। যার দায়ভার বিভাগীয় প্রধান হিসেবে আমাকেই গ্রহণ করতে হবে। তাই আমরা তিনজন বিভাগীয় প্রধান একমত হয়ে পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো: সালেহ উদ্দিন ‘ইত্তেফাক’কে বলেন, আমি এখনো পদত্যাগ পত্র পাইনি। পেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নিব।
প্রসঙ্গত ,গত ৩ মে বৃহস্পতিবার শাবির সিন্ডিকেটে গৃহীত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সামাজিক বিজ্ঞান, ভৌত বজ্ঞান, পদার্থ বিজ্ঞান ও ব্যবসা প্রশাসন অনুষদের শিক্ষকদের প্রভাষক থেকে সহকারী শিক্ষক পদে পদোন্নতির বয়সসীমা তিন বছর থেকে আড়াই বছর নির্ধারণ করা হয়। একইসাথে শিক্ষকদের নিজস্ব প্রকাশনা থাকলে দুই বছরে পদোন্নতি প্রদান করার সিদ্ধান্ত  গ্রহণ করে সিন্ডিকেট। এর প্রতিবাদে ফলিত বিজ্ঞান অনুষদের শিক্ষকরা ২ সপ্তাহ ধরে ধর্মঘট পালন করে আসছেন।
http://new.ittefaq.com.bd/news/view/96811/2012-05-15/73

মঙ্গলবার, ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০১১

পেট্রোলিয়াম এন্ড মাইনিং ইঞ্জিনিয়ারিং


লেখক: তামিম মজিদ  |  মঙ্গল, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০১১, ২৯ ভাদ্র ১৪১৮

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়
বাংলাদেশের প্রাকৃতিক সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবহার, উত্তোলন ও বণ্টনের জন্য দেশীয় প্রকৌশলী তৈরী করার লক্ষ্যে দেশে প্রথম সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০০৪ সালে স্কুল অব এপ্লায়েড সায়েন্স এন্ড টেকনোলজির অধীনে পেট্রোলিয়াম এন্ড মাইনিং (খনিজ) ইঞ্জিনিয়ারিং বিষয়ে অনার্স কোর্স চালু করা হয়। 
ভর্তির যোগ্যতা: বিজ্ঞান শাখা থেকে ২০১০ ও ২০১১ সালে এইচএসসি উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরা ভর্তির জন্য আবেদন করতে পারবেন। আপনার জিপিএ যদি এসএসসি ও এইচএসসি উভয় মিলে ৭  পয়েন্ট থাকে তাহলে আপনি ভর্তি পরীক্ষার যোগ্য বলে বিবেচিত হবেন। আগামী অক্টোবর-নভেম্বর নাগাদ শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা নেয়া হবে। ওয়েবসাইট www.sust.edu লগইন করলে ভর্তি সংক্রান্ত সকল তথ্য জানতে পারবেন। পেট্রোলিয়াম এন্ড মাইনিং ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে আসনসংখ্যা ৩০টি। এমসিকিউ পদ্ধতিতে ৭০ নাম্বারের পরীক্ষা নেয়া হয়।  বিজ্ঞানের বিভিন্ন বিষয় থেকে প্রশ্ন করা হয়। ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ মেধা তালিকা  অনুযায়ী শিক্ষার্থীদের ভর্তি করা হয়।
কি পড়ানো হয়: বহির্বিশ্বের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে পেট্রোলিয়াম এন্ড মাইনিং (খনিজ) ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ানো হয়। এর সাথে সামঞ্জস্য রেখে সিলেবাস প্রণয়ন করা হয়। বিভাগের আওতায় পড়ানো হয় ইনট্রোডাকশন পেট্রোলিয়াম, আর্থ সিস্টেম সায়েন্স, কেমিস্টি  ফর পেট্রোলিয়াম এন্ড মাইনিং ইঞ্জিনিয়ারিং, পেট্রোলজি এন্ড মিনারেলজি, ফ্লুইড ম্যাকানিক্স্র, সেডিমেন্টারি রক্স এন্ড স্ট্যাটিগ্রাপি, ফ্লুইড পপারটিজ, জিও ম্যাকানিক্স্র জিটেকনিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং, এনহান্সর্ড ওয়েল রিকভারি, কন্ট্রোল ইঞ্জিনিয়ারিং, পেট্রোলিয়াম প্রোডাকশন ইঞ্জিনিয়ারিং, হাজারড্স এন্ড রিকর্স ইন পেট্রোলিয়াম এন্ড মাইনিং ইঞ্জিনিয়ারিং, ন্যাচারেল গ্যাস ইঞ্জিনিয়ারিং, ইন্ডাস্ট্রিয়াল ইকোনোমিক্স্র এন্ড ম্যানেজমেন্ট, ওয়েল টেস্ট এ্যনালাইছিছ, এনভায়রনমেন্টাল ইঞ্জিনিয়ারিং, রিজারভার সিমুলেশন, ওয়েল এন্ড গ্যাস প্রোপারটি ইভুলেশন, মাইন এগজামিনেশন এন্ড ইভুলেশনসহ মোট ১৬৫ ক্রেডিটের নানা বিষয়।
ল্যাব সুবিধা: মানসম্পন্ন বিভাগ ও  ল্যাব সরঞ্জাম অত্যন্ত দামি হওয়ায় এ বিভাগের শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন প্রকৌশল বিভাগের ল্যাব ব্যবহার করে থাকেন। বিভাগে রিজারভার সিমুলেশন ও বেসিক ইঞ্জিনিয়ারিং ল্যাব রয়েছে। পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন গ্যাস ফিল্ড, কয়লা খনি ও  খনিজ তেলসহ বিভিন্ন ইন্ডাস্ট্রির ল্যাবে ব্যবহারিক কাজ করে থাকেন।
কর্মক্ষেত্র: চাকরির বাজারে পেট্রোলিয়াম এন্ড মাইনিং ইঞ্জিনিয়ারিং পাসকৃত শিক্ষার্থীদের বেশ কদর রয়েছে। বাংলাদেশে প্রথম ও একমাত্র  পেট্রোলিয়াম এন্ড মাইনিং ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগটি নতুন সৃষ্টি হওয়ায় অনেক জায়গায় এর কর্মক্ষেত্র রয়েছে। বাপেক্সের অধীনস্থ সকল কোম্পানি, পেট্রোবাংলা, শেভরন, এটোমিক এ্যনারজি কমিশন, গ্যাস ক্ষেত্র, কয়লা ক্ষেত্র, খনিজ তেল ক্ষেত্র ও কঠিন শিলাসহ বিভিন্ন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সংস্থা। এছাড়া এ বিভাগ থেকে পাসকৃত শিক্ষার্থীদের বিদেশে সহজে স্কলারশীপ সুবিধা পাওয়া যায়।
http://new.ittefaq.com.bd/news/view/40258/2011-09-13/21

বৃহস্পতিবার, ২৫ আগস্ট, ২০১১

শাবিতে ভর্তি পরীক্ষা ২৯ অক্টোবর

লেখক: শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি  |  শুক্র, ২৬ অগাষ্টu-এ ২০১১, ১১ ভাদ্র ১৪১৮
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (২০১১-২০১২) শিক্ষাবর্ষের স্নাতক শ্রেণীর ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে আগামী ২৯ অক্টোবর। এ বছর ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের নিয়মাবলী কিছুটা পরিবর্তিত হয়েছে। আগামী ১৫ সেপ্টেম্বর থেকে মোবাইলে ভর্তি ফরম রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া আগামী ১৫ অক্টোবর পর্যন্ত  চলবে। গতকাল বৃহস্পতিবার এক সাংবাদিক সম্মেলনে এসব কথা জানান ভর্তি কমিটির সচিব ড. মুস্তাবুর রহমান। এ সময় উপস্থিত ছিলেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো: সালেহ উদ্দিন, ভর্তি কমিটির সভাপতি ড. মোহাম্মদ ইউনুস ও ভর্তি পরীক্ষা সংক্রান্ত টেকনিক্যাল কমিটির সভাপতি ড. মুহাম্মদ জাফর ইকবাল।
সংবাদ সম্মেলনে জানান হয়, শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ে এ বছর ২৫টি বিভাগে ১৩৯৩টি আসনের মধ্যে ‘এ’ ইউনিটে ৫৯০টি এবং ‘বি’ ইউনিটে ৭৪০টি আসন রয়েছে। উল্লেখিত আসন ছাড়াও মুক্তিযোদ্ধার সন্তান, আদিবাসী এবং প্রতিবন্ধীর জন্য ৬৩টি আসন সংরক্ষিত রয়েছে।
‘এ’ ইউনিটভুক্ত সকল বিভাগ এবং ‘বি’ ইউনিটভুক্ত ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের রেজিস্ট্রেশন ফি বৃদ্ধি করে ৫৫০ টাকা করা হয়েছে। ‘বি’ ইউনিটভুক্ত সকল বিভাগের (আর্কিটেকচারসহ) পরীক্ষা ফি ৬০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে ।
http://new.ittefaq.com.bd/news/view/38338/2011-08-26/10

সোমবার, ২২ আগস্ট, ২০১১

দুর্নীতি দমন কীভাবে সম্ভব নতুন প্রজন্মের ভাবনা

সোম, ২২ অগাষ্টu-এ ২০১১, ৭ ভাদ্র ১৪১৮
অনুলিখন : তামিম মজিদ, আফরিন জামান মমিতা
দুর্নীতি দমন কীভাবে সম্ভব নতুন প্রজন্মের ভাবনা

দুর্নীতি দমন কীভাবে সম্ভব নতুন প্রজন্মের ভাবনা

সোম, ২২ অগাষ্টu-এ ২০১১, ৭ ভাদ্র ১৪১৮

পারিবারিক পর্যায় থেকে উচ্চশিক্ষার স্তর পর্যন্ত নৈতিক শিক্ষার প্রতি সর্বাধিক গুরুত্ব দিতে হবে
মো.  হারুন মিয়া
৪র্থ বর্ষ ২য় সেমিস্টার, সমাজকর্ম বিভাগ, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, সিলেট।
দুর্নীতির করাল গ্রাসে সম্ভাবনাময় বাংলাদেশের ভবিষ্যত্ ক্রমশ হয়ে উঠেছে অনিশ্চিত ও অনুজ্জ্বল। রাষ্ট্রীয় প্রশাসন থেকে শুরু করে দেশের রাজনীতি, অর্থনীতি, সমাজনীতি, শিক্ষানীতি, সংস্কৃতি, শিল্প, ব্যবসা-বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানে চলছে চরম দুর্নীতি। দুর্নীতি সমাজের প্রচলিত নীতি, আদর্শ ও মূল্যবোধের পরিপন্থি বিশেষ ধরনের অপরাধমূলক আচরণ। সাধারণত ঘুষ, বল প্রয়োগ, ভয় প্রদর্শন, প্রভাব ও ব্যক্তি বিশেষকে বিশেষ সুবিধা প্রদানের মাধ্যমে, গণপ্রশাসনের মাধ্যমে ক্ষমতার অপব্যবহারের দ্বারা ব্যক্তিগত সুবিধা অর্জনকে দুর্নীতি বলা হয়। বাংলাদেশে বিভিন্ন কারণে দুর্নীতি হয়ে থাকে। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য কারণ হচ্ছে, এই দেশে ঐতিহাসিকভাবে দুর্নীতি চলে আসছে। আর্থিক অসচ্ছলতা, উচ্চাভিলাষী জীবনের মোহ, বেকারত্ব, অর্থের মানদণ্ডে প্রভাব-প্রতিপত্তি ও মর্যাদার অধিকারী। রাজনৈতিক ও সামাজিক অস্থিরতা, অপর্যাপ্ত বেতন ও পারিশ্রমিক প্রদান, আইনের সঠিক ব্যবহারের অভাব, দুর্নীতি দমনে সদিচ্ছার অভাব, নৈতিক অবক্ষয়, দেশপ্রেম ও মানবিক মূল্যবোধের অভাব। বর্তমানে দেশের সমাজ, রাজনীতি, অর্থনীতিসহ জীবনযাত্রার  সকল ক্ষেত্রে দুর্নীতির এক মহাবিপর্যয়ের পরিস্থিতির উদ্ভব ঘটেছে। দুর্নীতির করাল গ্রাস থেকে সবাই মুক্ত হতে চায়। দুর্নীতি প্রতিরোধে আমাদের করণীয় সত্, দক্ষ ও দেশপ্রেমিক নাগরিক গড়ে তোলার পরিকল্পনা ও তার বাস্তবায়ন করা দরকার। দুর্নীতিবিরোধী টাস্কফোর্স গঠন যেমন ‘  ’ কর্মসূচি। ন্যায়পালের পদ বাস্তবায়ন করা, স্বাধীন ও নিরপেক্ষ বিচার বিভাগ প্রতিষ্ঠা করা, স্বাধীন দুর্নীতি দমন কমিশন গঠন, সরকারি নিরীক্ষা কমিটি গঠন, রাজনৈতিক নেতাদের সত্ ও আইনগত নির্দেশনা প্রদান করা, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করা, আয়-ব্যয়ের সামঞ্জস্যহীনতার জবাবদিহিতার ব্যবস্থাকরণ, দুর্নীতিবাজদের সামাজিকভাবে বয়কটকরণ, পর্যাপ্ত বেতন ও পারিশ্রমিক প্রদান করতে হবে। দুর্নীতি দমনে আদর্শ ও সর্বোত্কৃষ্ট উপায় হলো মানুষের মাঝে সামাজিক, নৈতিক ও ধর্মীয় মূল্যবোধকে জাগ্রত করা। কারণ নৈতিক ও ধর্মীয় মূল্যবোধসম্পন্ন মানুষ কখনো দুর্নীতির আশ্রয় নিতে পারে না। পারিবারিক পর্যায় থেকে উচ্চ শিক্ষার স্তর পর্যন্ত নৈতিক শিক্ষার প্রতি সর্বাধিক গুরুত্ব দিতে হবে। তবেই সত্, দক্ষ ও দেশপ্রেমিক নাগরিক গড়ে ওঠবে। তখন দুর্নীতি নামক এই সর্বনাশা ও সর্বগ্রাসী সামাজিক ব্যাধির মূলোত্পাটন সম্ভব হবে বলে আমার বিশ্বাস। আমাদের শ্লোগান হওয়া উচিত ‘ ব্যক্তি পরিবর্তনের মাধ্যমে জাতীয় জীবনের দুর্নীতি প্রতিরোধ করা’ । 

ছোটবেলা থেকেই দুর্নীতির বিরুদ্ধে ছেলে-মেয়েকে সচেতন করে গড়ে তুলতে হবে
মোছা.  হাছনা বেগম
 ১ম বর্ষ ২য় সেমিস্টার, রাজনীতিবিদ্যা বিভাগ, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, সিলেট
দুর্নীতির ভারাক্রান্তে আমাদের সমাজ আজ ভারাক্রান্ত। রাষ্র্বে এমন কোন সেক্টর নেই যেখানে দুর্নীতি গ্রাস করেনি। অনিয়ম আর দুর্নীতিতে সমাজের সবর্ত্র ছেয়ে গেছে। দুর্নীতিতে আজ আমরা বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ।  পুলিশ বিভাগ, বিচার বিভাগ, সচিবালয় ও  মন্ত্রণালয়সহ প্রত্যেক সেক্টর দুর্নীতির স্বর্গরাজ্যে পরিণত হয়েছে। দুর্নীতি আমাদের সমাজ থেকে সহজে দূর হবে না। এজন্য সুদূরপ্রসারী কিছু পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে। দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়ার মূল কারণ আমরা নৈতিকতা থেকে দূরে সরে এসেছি। নতুন প্রজন্মকে  দুর্নীতিমুক্ত করতে হলে  নিম্নোক্ত পলিসি নেয়া যেতে পারে। যেমন, এইচএসসি পর্যন্ত শিক্ষার সকল শাখায় দুর্নীতিবিরোধী  পাঠ বাধ্যতামূলক করা যেতে পারে। ছোটবেলা থেকেই দুর্নীতির বিরুদ্ধে ছেলে-মেয়েকে সচেতন করে গড়ে তুলতে হবে। আধুনিক শিক্ষার পাশাপাশি সন্তানদের ধর্মীয় ও নৈতিক শিক্ষা দিতে হবে। ধর্মীয় অনুশাসনই পারে আমাদের সমাজকে দুর্নীতিমুক্ত করতে। ধর্মীয় আইন মেনে চললে দুর্নীতি  শূন্যের কোটায় নেমে আসবে। ইসলাম ধর্মে দুর্নীতিসহ অবৈধ সকল কাজ হারাম। আল্লাহ প্রদত্ত এই আইন পূর্ণাঙ্গ অনুসরণ করলে বাংলাদেশে দুর্নীতি থাকবে না। এরকম অন্যান্য ধর্মের রীতিনীতি অনুযায়ী অন্য সকল ধর্মাবলম্বী মানুষ চললে দুর্নীতি হ্রাস করা সম্ভব।
অপরদিকে প্রশাসন দুর্নীতিমুক্ত করতে হলে কয়েকটা পলিসি নেয়া যেতে পারে। যেমন, পুলিশ বিভাগ, বিচার বিভাগ, সরকারি কর্মকমিশন, শিক্ষা বোর্ড, সকল মন্ত্রণালয় ও সর্বোপরি সরকারি আমলাদের কাজকর্মে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে। সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের  বেতন ও আনুষঙ্গিক সকল সুযোগ-সুবিধা বাড়ানো যেতে পারে। দুর্নীতিবিরোধী সভা-সেমিনার করা যেতে পারে। এছাড়া দুর্নীতি রুখতে জনগণকেও সচেতন করে গড়ে তুলতে হবে। দুর্নীতি অন্যায় কাজ এটা জনগণকে বুঝাতে হবে। সর্বোপরি সরকার, প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী ও জনগণ সবার সম্মিলিত প্রচেষ্ঠায় বাংলাদেশে দুর্নীতি হ্রাস করা যেতে পারে।

অসাধু কর্মকর্তাদের বহিষ্কার করে  সত্, যোগ্য
এবং মেধাবী লোকদের নিয়োগ দিতে হবে
কাজী জোবায়দা
অনার্স ৩য় বর্ষ, মনোবিজ্ঞান বিভাগ
বেগম বদরুনেসা সরকারি মহিলা, কলেজ, ঢাকা।
দুর্নীতি দমন করতে হলে সর্বপ্রথম আমাদের যে কাজটি করতে হবে তা হলো, কোনভাবেই দুর্নীতিবাজদের সাথে আপস করা যাবে না। তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা নিতে হবে। এবং তারা যাতে আইনের ফাঁক-ফোকর দিয়ে না বেরিয়ে যায় সে জন্য আইন ব্যবস্থাকে আরো কঠোর করতে হবে। অসাধু কর্মকর্তাদের বহিষ্কার করে সেই ক্ষেত্রে সত্, যোগ্য এবং মেধাবী লোকদের নিয়োগ দিতে হবে। তাছাড়া দেশের উন্নয়নের কার্যাবলীতে রাজনীতিমুক্ত পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে। দেশের রাজনৈতিক নেতারাও যদি দুর্নীতি করে তাহলে তাদেরও সঠিক বিচার কতে হবে। এবং জবাবদিহিতামূলক ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে। সে ক্ষেত্রে সরকারের ভূমিকা অধিক গুরুত্বপূর্ণ। তাছাড়া সবচেয়ে বড় কথা হলো দুর্নীতি দূর করতে হলে রাজনৈতিক কালো হাতের ক্ষমতা বন্ধ করতে হবে, জনগণকে সোচ্চার হতে হবে, দুর্নীতিবাজদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে যাতে নতুন করে কেউ দুর্নীতি করতে ভয় পায়। তাছাড়া দুর্নীতির বিষয়ে কঠিন মনোভাব পোষণ করতে হবে। নিজ নিজ অবস্থানে থেকে দুর্নীতিকে প্রতিরোধ করতে হবে।

দুর্নীতিকে জনগণ যেন ধিক্কার জানায়
 এমন জাগরণ সৃষ্টি করতে হবে
সোহরাব ভুঁইয়া 
৪র্থ বর্ষ ২য় সেমিস্টার, নৃবিজ্ঞান বিভাগ, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, সিলেট। 
তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোতে দুর্নীতি  উন্নয়নের  ক্ষেত্রে প্রধান অন্তরায়। দুর্নীতির কারণে বাংলাদেশ উন্নত হতে পারছে না। দুর্নীতিবাজরা দেশের হাজার হাজার কোটি টাকা লুটপাট করে খাচ্ছে। যে সরকারই ক্ষমতায় থাকে সে সরকারের মন্ত্রীরাই রাষ্র্বীয় টাকা লুটপাট করে খায়। দেশের টাকা বিদেশে পাচার করে। আমাদের প্রত্যেকটা সেক্টরে দুর্নীতি। দুর্নীতির কারণে আজ আমরা বিপর্যস্ত ও অনুন্নত জাতি । এই অবস্থার উত্তোরণ ঘটাতে হবে। প্রথমেই আমাদের মাননীয় মন্ত্রী ও সংসদ সদস্যদের দুর্নীতির লাগাম টেনে ধরতে হবে। তারপর অন্যান্য জনপ্রতিনিধি ও রাজনীতিবিদের স্বজনপ্রীতি ও দুর্নীতি কমাতে হবে।  উপজেলা পর্যায় থেকে শুরু করে সচিবালয় পর্যন্ত সকল প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের দুর্নীতি বন্ধ করতে হবে। স্বাধীন দুর্নীতি দমন কমিশন গঠন করতে হবে। কিন্তু আমাদের দুদকের কার্যক্রম সম্পূর্ণ প্রশ্নবিদ্ধ। দুর্নীতি দমনের জন্য আইন প্রণয়ন করা দরকার। যাতে কেউ দুর্নীতি করলে তার শাস্তির বিধান করতে হবে। দুর্নীতি প্রমাণিত হলে নির্দিষ্ট মেয়াদে কারাদণ্ড দেয়া যেতে পারে। তাহলে ভয়ে কেউ দুর্নীতি করবে না। এছাড়া ছেলে-মেয়েকে দুর্নীতিবিরোধী শিক্ষা দিতে হবে। তাদের মাঝে ঘৃণা জন্মাতে হবে। আমাদের প্রচলিত আইনকে কার্যকরী করতে হবে। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করতে হবে। দুর্নীতিকে জনগণ যেন ধিক্কার জানায় জনগণের মাঝে এমন জাগরণ সৃষ্টি করতে হবে। নৈতিক শিক্ষা ছাড়া দুর্নীতি কমে আসবে না। দুর্নীতি কমে আসলে বাংলাদেশ একটি উন্নত সমৃদ্ধশালী রাষ্ট্রে পরিণত হবে।

লোভ-লালসাকে জলাঞ্জলি দিয়ে সত্যিকারের মানুষ হওয়ার আপ্রাণ চেষ্টা করতে হবে
সায়মা কাউসার লোপা
অনার্স ৪র্থ বর্ষ, মনোবিজ্ঞান বিভাগ
বেগম বদরুনেসা সরকারি মহিলা, কলেজ, ঢাকা।
দুর্নীতি দমন করতে হলে সর্বপ্রথম প্রয়োজন আমাদের সত্ ইচ্ছা। তবে তার পাশাপাশি সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা অধিক গুরুত্বপূর্ণ। আমরা যদি একটু সচেতন হই তবে খুব সহজেই দুর্নীতিকে প্রতিহত করতে পারি। কেননা একজন সচেতন নাগরিকই পারে একটি জাতিকে সচেতন করতে। তাছাড়া দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করতে হবে। বিচার বিভাগের স্বাধীনতা থাকবে, জবাবদিহিতামূলক শাসন ব্যবস্থা থাকবে, সংবিধানকে সম্মান করে সেই অনুসারে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। তাছাড়া জীবনযাত্রার মান অনুসারে সুষম বেতন কাঠামো ও পর্যাপ্ত পারিশ্রমিক নির্ধারণ করতে হবে। এবং দুর্নীতি দমন  কমিশনকে সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে হবে। এছাড়াও সবচেয়ে বড় কথা হলো নিজের কাছে নিজেকে প্রতিজ্ঞা করতে হবে যে, নিজ নিজ অবস্থানে থেকে সততা ও নিষ্ঠার সাথে কাজ করতে হবে। কেবল নিজের স্বার্থে নয়, অন্যের স্বার্থকে বড় করে দেখতে হবে। এবং লোভ-লালসাকে জলাঞ্জলি দিয়ে সত্যিকারের মানুষ হওয়ার আপ্রাণ চেষ্টা করতে হবে।

গণমাধ্যমে দুর্নীতির বিরুদ্ধে বিভিন্ন কার্যক্রম প্রচার করতে হবে
মৌসুমী জামান
 অনার্স ২য় বর্ষ (রাষ্ট্র বিজ্ঞান বিভাগ)
বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজ, ঢাকা।

বর্তমানে দুর্নীতি একটি সামাজিক ব্যাধিতে রূপ ধারণ করেছে। সমাজের প্রতিটি ক্ষেত্রে প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে দুর্নীতি জড়িয়ে আছে। যা আমাদেরকে ধীরে ধীরে ধ্বংসের পথে নিয়ে যাচ্ছে। দুর্নীতি লাগামহীন ঘোড়ার মত ছুটেই চলেছে। তাই আর বসে থাকলে চলবে না। শক্ত হাতে ধরতে হবে এই লাগাম। বন্ধ করতে হবে দুর্নীতির সকল ক্ষেত্র। সরকারি পৃষ্ঠপোষকতার পাশাপাশি সাধারণ জনগণকে সোচ্চার হতে হবে। গণমাধ্যমে দুর্নীতির বিরুদ্ধে বিভিন্ন কার্যক্রম প্রচার করতে হবে। এবং মেধা অনুসারে যোগ্য, সুশিক্ষিত জনবল নিয়োগ করতে হবে। আইনের প্রয়োগ কঠিন হতে হবে। স্বজনপ্রীতি দূর করতে হবে। দুর্নীতিবাজদের শুধু কর্মক্ষেত্রে নয়, বরং সমাজ থেকে বহিষ্কার করতে হবে। এদের কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। প্রয়োজনে মৃত্যুদন্ড পর্যন্ত দেওয়ার সুব্যবস্থা রাখতে হবে।

বৃহস্পতিবার, ১৮ আগস্ট, ২০১১

বাংলাদেশ : গণতন্ত্র উত্তরণের উপায় নতুন প্রজন্মের ভাবনা

ছবি ও অনুলিখন :তামিম মজিদ
বুধ, ১৭ অগাষ্টu-এ ২০১১, ২ ভাদ্র ১৪১৮

বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতির পরিবর্তন হলেই কেবল এ শর্ত পূরণ হতে পারে
মায়ীশা হক
১ম বর্ষ ২য় সেমিস্টার, রাজনীতিবিদ্যা বিভাগ,
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, সিলেট।
গণতন্ত্রের জন্য বাংলাদেশের মানুষের লড়াই অনেক দিনের পুরনো। ব্রিটিশ শাসন আমল থেকেই শুরু হয়েছে এ অধিকার আদায়ের লড়াই, এখনো সেটি চলছে। যদিও মাঝে বছর দু’য়েকের একটি বিরতি বাদ দিলে বিগত দুই দশক ধরে অন্তত কাগজে-কলমে হলেও গণতান্ত্রিক শাসনই চলছে বাংলাদেশে, কিন্তু সত্যিকারের গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র গড়ে তুলতে হলে এ ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করতে হবে আরো। কিন্তু কী ভাবে?
এ প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে হলে আগে খুঁজতে হবে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার ত্রুটিগুলো। বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার সবচেয়ে বড় দুর্বলতা হলো, সরকার ব্যবস্থা সংসদীয় ধরনের হলেও এখানে প্রধান দুটি দলের দুই নেত্রীর হাতে ক্ষমতা এমনভাবে কেন্দ্রীভূত যে তাঁরা নির্বাচিত হলেও প্রায় একনায়কতান্ত্রিকভাবেই সরকার পরিচালনা করে থাকেন। এ ব্যবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য প্রয়োজন রাজনৈতিক দলগুলোর নিজেদের সংগঠন পরিচালনায় গণতান্ত্রিক রীতির প্রচলন। আশার কথা, নির্বাচনী সংস্কারের পথ ধরে খুব ধীরে ধীরে হলেও সে প্রক্রিয়াটি শুরু হয়েছে। গণতন্ত্র কেবলই সংখ্যাগরিষ্ঠের শাসন নয়, সংখ্যালঘুর মতামতকেও গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা এ প্রক্রিয়ার সাফল্যের অন্যতম শর্ত। বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতির পরিবর্তন হলেই কেবল এ শর্ত পূরণ হতে পারে।

গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে গণতন্ত্রের মূল বৈশিষ্ট্য অনুসারে কাজ করতে হবে
জাবের আল ওসমানী
১ম বর্ষ ২য় সেমিস্টার, রাজনীতিবিদ্যা বিভাগ,
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, সিলেট।
বর্তমান  বিশ্বে গণতন্ত্র  একটি আলোচিত বিষয়। গণতন্ত্র যুগ-যুগ ধরে রাষ্ট্রনৈতিক চিন্তা জগতে তুমুল আলোড়ন সৃষ্টি করে আসছে। গণতন্ত্রকে আদর্শ ভাবে প্রতিষ্ঠা করার জন্য শত শতাব্দী ধরে সভ্য মানব জাতি সংগ্রাম করে আসছে। রাজনীতির ক্ষেত্রে গণতন্ত্র একটি প্রাচীনতম ধারণা। কিন্তু সামপ্রতিক কালে গণতন্ত্র নবীন ও জনগণের প্রত্যাশিত শাসন ব্যবস্থা। বর্তমান আধুনিক যুগ গণতান্ত্রিক যুগ। গ্রিক দার্শনিক পেরিক্লিস গ্রীক নগর রাষ্ট্র এথেন্সকে আদর্শ গণতন্ত্র বলে উল্লেখ করেন। পেরিক্লিস মূলত আইনের শাসন ও যোগ্যতার ভিত্তিতে সরকারী কর্মচারী নিয়োগ করাকেই গণতান্ত্রিক সরকারের প্রধান বৈশিষ্ট্য বলে মনে করতেন। সাধারণ ভাবে গণতন্ত্র বলতে এমন এক ধরনের শাসন ব্যবস্থাকে বুঝায়, যেখানে জনগণ প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে প্রতিনিধিদের মাধ্যমে নিজেদেরকে শাসন করে। জন স্টুয়ার্ট মিলের মতে গণতান্ত্রিক জনগণ,  গণতান্ত্রিক পরিবেশ, গণতান্ত্রিক ঐতিহ্য, আইনের শাসন, ব্যাপক শিক্ষা ব্যবস্থা, জনগণের আস্থা অর্জন, অর্থনৈতিক সাম্য, সামাজিক সাম্য, ক্ষমতার বিকেন্দ্রকরণ, উপযুক্ত নেতৃত্ব, সহনশীলতা, মুক্ত ও স্বাধীন প্রচার , যোগ্য নেতৃত্ব, সুষ্ঠু দলীয় ব্যবস্থা, উন্নত চরিত্র ও নৈতিকতা, সচেতনতা, মুক্ত আলোচনা ও মত প্রকাশের স্বাধীনতা, সুষ্ঠু অর্থনৈতিক ব্যবস্থা, অবাধ ও নিরপেক্ষ  নির্বাচন ও আইনের প্রতি শ্রদ্ধা  থাকতে হবে। গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে গণতন্ত্রের মূল বৈশিষ্ট্য অনুসারে কাজ করতে হবে। এছাড়া বিচার বিভাগ ও গণমাধ্যমের উপর সরকারি হস্তক্ষেপ বন্ধ করতে হবে। তাহলেই আমরা বাংলাদেশের গণতন্ত্র অনেকটা শক্তিশালী হিসেবে দেখতে পারব।

জাতীয় স্বার্থ রক্ষার ক্ষেত্রে সরকারি দল ও বিরোধী দলের মধ্যকার মতৈক্য দূর করতে হবে
শিরিন সুলতানা
মাস্টার্স ১ম সেমিস্টার, রাজনীতিবিদ্যা বিভাগ,
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, সিলেট।
আমরা বহুকাল থেকে গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করে আসছি। কিন্তু আমরা কখনো গণতন্ত্রের পূর্ণাঙ্গ রূপ দেখতে পাইনি। এর মূলে রয়েছে যোগ্য নেতৃত্বের অভাব, স্বদেশ প্রেমের অভাব, অযোগ্য ও অদক্ষ ব্যক্তি জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হওয়া, দুর্নীতির গ্রাস, আমলাতন্ত্রে রাজনৈতিক প্রমোশন, স্বজনপ্রীতি  ও আমাদের দেশের রাজনৈতিক অস্থিরতা। শিক্ষিত রাজনীতিবিদদের অভাব। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য দেশ স্বাধীন হলেও আমরা গণতন্ত্রের প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে পারিনি। আমাদের রাজনীতি পরিবারতান্ত্রিক। কাগজে-কলমে বড় দুই রাজনৈতিক দল গণতান্ত্রিক সংগঠন। কিন্তু তাদের কাজ-কর্ম স্বৈরতান্ত্রিক মনে হয়। গণতন্ত্র উত্তরণ করতে হলে জাতীয় স্বার্থ রক্ষার ক্ষেত্রে সরকারি দল ও বিরোধী দলের মধ্যকার মতৈক্য দূর করতে হবে। জনপ্রতিনিধি ও আমলাদের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে। জনগণের মতামতকে প্রাধান্য দিতে হবে। প্রশাসনিক ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে হবে। প্রশাসনিক নিয়োগের ক্ষেত্রে দলীয়করণ ও স্বজনপ্রীতির উর্ধ্বে উঠে মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ দিতে হবে। সর্বোপরি প্রত্যেক রাজনৈতিক দলের কর্মী ও জনগণ গণতন্ত্র মনস্ক হতে হবে। পৃথিবীর উন্নত গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের অনুসরণ করে দেশ চালাতে বিভিন্ন পলিসি গ্রহণ করতে হবে। তাহলেই আমরা প্রকৃত গণতন্ত্র পেতে পারি।
শিক্ষার সকল শাখায় গণতন্ত্র বিষয়ে নির্দিষ্ট সিলেবাস প্রণয়ন করতে হবে
মাজহারুল হক সরকার
৩য় বর্ষ ২য় সেমিস্টার, অর্থনীতি বিভাগ,
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, সিলেট।
বাঙ্গালী জাতি গণতন্ত্রমনা। তাই অনেক আগে থেকেই গণতন্ত্রের জন্য সংগাম করে আসছে। ৫২ সালে ভাষার জন্য প্রাণ দিয়েছে। ৭১ মুক্তিযুদ্ধে স্বাধীনতার জন্য লক্ষ লোক জীবন দিয়েছে। স্বাধীর ভাবে বেঁচে থাকার জন্য। কিন্তু আমরা আদৌ কী স্বাধীন ? আমাদের রাষ্ট্রে কী আদৌ গণতন্ত্র আছে ? গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা দুর্বল হওয়ার পেছনে বহুবিধ কারণ রয়েছে। আমাদের দেশের সর্বক্ষেত্রে চরম দলীয়করণ আর স্বজনপ্রীতি । গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে সরকারের সমালোচনা করার অধিকার সবার আছে। কথা বলার অধিকার সবার আছে। কিন্তু সরকারের সমালোচনা করলে পুলিশ এসল্ট মামলা দেয়া হয়। গ্রেফতার করে রাজনীতিবিদসহ বিরোধী মতের সবাইকে নির্যাতন করা হয়। বিনা অপরাধে বছরের পর বছর জেল খাটতে হয় নিরীহ রাজনীতিবিদদের। আন্দোলন জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার। অধিকার আদায়ে জনগণ আন্দোলন করবেই। এটা গণতন্ত্রের অন্যতম বৈশিষ্ট্য। কিন্তু প্রত্যেক সরকারগুলো জনগণের গণতান্ত্রিক আন্দোলনে বাঁধা দেয়।  রাষ্ট্রের সর্বক্ষেত্রে ইনসাফ প্রতিষ্ঠা করতে হবে। নৈতিকতা সম্পন্ন জনগণ গড়ে তুলতে হবে। নৈতিক শিক্ষায় শিক্ষিত করতে হবে। শিক্ষার সকল শাখায় গণতন্ত্র বিষয়ে নির্দিষ্ট সিলেবাস প্রণয়ন করতে হবে। এটি বাধ্যতামূলক করতে হবে। সমাজে অন্যায় অবিচার বন্ধ করতে হবে। গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে সরকারি হস্তক্ষেপ মুক্ত করা প্রয়োজন। সবাইকে স্বদেশ প্রেমে বলীয়ান হয়ে অগণতান্ত্রিক কাজ বর্জন করে সুন্দর ন্যায় ও গণতান্ত্রিক কাজ করতে হবে। তাহলেই আমাদের দেশে গণতন্ত্র শক্তিশালী হবে।

দলমত নির্বিশেষে যোগ্য নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠা করতে হবে
শিমুল দত্ত
মাস্টার্স ১ম সেমিস্টার, রাজনীতিবিদ্যা বিভাগ,
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, সিলেট।

গণতন্ত্র বর্তমান বিশ্বের সবচেয়ে সর্বোত্কৃষ্ট শাসন ব্যবস্থা। প্রকৃত গণতন্ত্র ধারণ করতে পারলে দেশ উন্নতির দিকে এগিয়ে যাবে। পৃথিবীর অধিকাংশ রাষ্ট্রে এখন গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থা  চালু আছে। উন্নত দেশগুলো গণতন্ত্রের আদর্শ ধরে রাখতে পারছে বলেই তারা উন্নত জাতি হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। বাংলাদেশ গণতন্ত্রের মূল আদর্শ থেকে বিচ্যুত হয়ে পড়েছে। এ জন্য আমাদের সমাজে এত অশান্তি আর রাজনৈতিক অস্থিরতা বিরাজ করছে। গণতন্ত্রের সুফল পেতে হলে আমাদের রাজনীতিবিদ ও জনগণকে সচেতন হতে হবে। সরকারকে জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য জনগণের প্রতিনিধি দ্বারা সুষ্ঠু নির্বাচন প্রয়োজন। নির্বাচন প্রক্রিয়াকে স্বচ্ছ করতে হবে। অযোগ্য ব্যক্তিদের  প্রশাসনে পদোন্নতি বন্ধ করতে হবে। দলীয় ভাবে না দেখে মেধাবীদের পদোন্নতি দিতে হবে। প্রশাসনিক কার্যাবলির বিকেন্দ্রকরণ ঘটাতে হবে। আমলাদের দৌরাত্ম্য কমাতে হবে। সর্বোপরি দলমত নির্বিশেষে যোগ্য নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠা করতে হবে যিনি নিজের স্বার্থ ত্যাগ করে জনগণের কল্যাণে কাজ করবেন। সমগ্র দেশ ও জাতির জন্য কাজ করবেন। তাহলেই আমরা গণতান্ত্রিক সোনার বাংলাদেশ গঠন করতে পারব।

গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানসমূহকে শক্তিশালী করতে হবে
সাজিদুল ইসলাম সবুজ
৪র্থ বর্ষ ২য় সেমিস্টার, রাজনীতিবিদ্যা বিভাগ,
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, সিলেট।
পরাধীনতার শৃংখল হতে নিজেদের মুক্ত করতে ও স্বাধীন মত প্রকাশের জন্য দেশ স্বাধীন হয়েছিল। গণতন্ত্রান্ত্রিক বাংলাদেশের জন্য মুক্তিযুদ্ধে লক্ষ লক্ষ মানুষ প্রাণ দিয়েছে। স্বাধীনতার ৪০ বছরেও আমরা গণতন্ত্রের স্বাদ পাইনি। আমাদের রাজনীতিবিদরা গণতন্ত্রকে গলাটিপে হত্যা করেছেন? নাকি জনগণ করেছে? আমাদের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার দুর্বলতার মূল কারণ, প্রত্যেক  গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ। নির্বাচন কমিশন, সংসদ, দুদক, বিচার বিভাগসহ  এমন কোন সেক্টর নেই যেখানে সরকারের হস্তক্ষেপ থাকে না। এই সংস্কৃতি থেকে প্রত্যেক সরকার বা রাজনৈতিক দলকে বেরিয়ে আসতে হবে। রাজনৈতিক নেতৃত্বে পরিবর্তন আনতে হবে। দলের নেতাকর্মীদের প্রত্যক্ষ ভোটে নেতা নির্বাচন করতে হবে। বাংলাদেশের গণতন্ত্র উত্তোরণের জন্য প্রথমেই গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানসমূহকে শক্তিশালী করতে হবে। যেমন, নির্বাচন কমিশন, সংসদ, দুদক, বিচার বিভাগ প্রভৃতি। আমাদের দেশে রাজনৈতিক দলসমূহের অভ্যন্তরীণ গণতন্ত্র চর্চার অভাব রয়েছে্ । সুষ্ঠুু গণতন্ত্রের জন্য রাজনৈতিক দলগুলোতে গণতান্ত্রিক চর্চা থাকা অত্যাবশ্যক। দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে তা  না থাকলে তারা ক্ষমতায় গিয়ে গণতন্ত্র চর্চা করতে পারবে না।  গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করার জন্য গণতান্ত্রিক মূল্যবোধসম্পন্ন নেতৃত্ব, শক্তিশালী ছায়া সরকার গঠন, কার্যকর কমিটি ব্যবস্থা, কার্যকর সংসদ ও সর্বোপরি সরকার ও বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের সুষ্ঠু গণতান্ত্রিক মানসিক বিকাশ ঘটাতে হবে।
http://new.ittefaq.com.bd/news/view/35993/2011-08-17/19

শাবিতে শিক্ষকের অপসারণের দাবিতে স্মারকলিপি প্রদান

লেখক: শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয় সংবাদদাতা  |  শুক্র, ১৯ অগাষ্টu-এ ২০১১, ৪ ভাদ্র ১৪১৮
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের প্রভাষক সালেহ আহমেদ আব্দুল্লাহর অপসারণ দাবিতে গত বুধবার উপাচার্য বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছে বিভাগের কিছু শিক্ষার্থী। ঐ শিক্ষকের বিরুদ্ধে ক্লাস কম নেয়া, স্বজনপ্রীতি, স্বেচ্ছাচারিতা, শিক্ষার্থীদের ভয়ভীতি প্রদর্শন, অনুগত শিক্ষার্থীদের পরীক্ষার হলে উত্তর বলে দেয়াসহ নানা অভিযোগ এনে ২০০৯-১০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীরা এ স্মারকলিপি দেয়। তার অপসারণের দাবিতে ৫ দিনের আল্টিমেটাম দিয়েছে শিক্ষার্থীরা। সালেহ আহমেদ আব্দুল্লাহকে বিএএন ২৭২ কোর্স থেকে অপসারণ করা না হলে  বিভাগ অচল করারও  হুমকি দেয় তারা।
http://new.ittefaq.com.bd/news/view/36557/2011-08-19/10