শুক্রবার, ২২ জুলাই, ২০১১

গ্রুপস্টাডির মাধ্যমে কঠিন বিষয়সহজ হয়

লেখক: তামিম মজিদ  |  বুধ, ২০ জুলাই ২০১১, ৫ শ্রাবণ ১৪১৮
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়

নিয়মিত ক্লাস, এ্যাসাইনমেন্ট ও টার্মটেস্ট শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নিত্যদিনের চিত্র। আর সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষার ঝামেলা তো আছেই। এভাবে প্রতিদিন কোন না কোন একটা বিষয় নিয়ে ছাত্র-ছাত্রীদের পড়ালেখায় ব্যস্ত থাকতে হয়। ক্লাসের ফাঁকে কিছুটা সময় পেলেই শিক্ষার্থীরা গ্রুপ স্টাডি করে ও আবার কেউ কেউ আড্ডায় মেতে ওঠে । বিশ্ববিদ্যালয়ে সকাল ৮টা থেকে ক্লাস শুরু হয়ে বিকেল ৫টা পর্যন্ত চলে। এজন্য শিক্ষার্থীদের সারা দিন ক্যাম্পাসে থাকতে হয়। তাই ক্লাসের ফাঁকের শিক্ষার্থীরা সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডে, ফ্রি ওয়াইফাই সুবিধা থাকায় ইন্টারনেট ব্যবহার করে বিভিন্ন ধরনের বই জার্নাল ডাউনলোড, ফেসবুকে বন্ধুদের সাথে যোগাযোগ, গ্রুপ স্টাডি, গান ও আড্ডা দিয়ে সময়টা কাজে লাগায়। লাইব্রেরী ভবনে সকাল ৮টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের ভিড় লেগেই থাকে। লাইব্রেরীতে স্টাডি, বই নেয়া ও পত্রিকা পড়ায় ব্যস্ত থাকে শিক্ষার্থীরা। আবার কেউ কেউ একাডেমিক পড়ার পাশাপাশি লাইব্রেরী ভবনের ৪র্থ তলায় মুক্তিযুদ্ধ কর্নারে গিয়ে মুক্তিযুদ্ধের বিভিন্ন ইতিহাস পড়ে। আমাদের মুক্তিযুদ্ধ কর্নারে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সকল বই পাওয়া যায়। এভাবেই ক্যাম্পাসে দিন কাটে শিক্ষার্থীদের।
অর্থনীতি ও সমাজকর্ম বিভাগের ৩য় বর্ষ ২য় সেমিস্টারের শিক্ষার্থী সাঈদা, দীপান্বিতা, শান্তা, মাজহারুল, বদরুল, কৌশিক, কান্তা, এমদাদ, তাহমিনা, পাপিয়া, মনোয়ারা ও সমাজকর্মের তুলি, তান্নি, ঐশি, বাবলি, নুরুল, মিঠুন, জয়ন্ত, মাশকুরা, আতিক ও মোল্লা নাসির জানান, গ্রুপ স্টাডি করলে অনেক কঠিন বিষয় সহজ হয়ে যায়। নতুন কিছু শেখা যায়। আর আড্ডা ছাড়াতো ক্যাম্পাস জীবন অর্থহীন। আড্ডা মাধ্যমে সবার মাঝে বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে। গড়ে ওঠে নতুন সম্পর্ক।
আর আবাসিক শিক্ষার্থীরা বিকেলে    শাহপরান হল, সিরাজুন্নেসা চৌধুরী হল, ১ম ছাত্রী হলের পাশে আড্ডা দেয়। এছাড়াও শহীদ মিনার, সেন্ট্রাল অডিটোরিয়াম, ভালোবাসা চত্বর, গোল চত্বর ও ফুডকোর্ট কর্নারে আড্ডা বেশী হয়ে থাকে। আর আবাসিক হলের শিক্ষার্থীদের বিড়ম্বনারও শেষ নেই।  হলে পানি সংকট ও  খাবার সমস্যা প্রকট। ডাইনিংয়ে  খাবার আছে অথচ খাবারে পুষ্টি নেই। হলের আশপাশে ফুডকোর্ট ও দোকান নেই।  অন্তহীন সমস্যা নিয়ে দিন কাটাতে হচ্ছে আবাসিক ছাত্র-ছাত্রীদের। বিশ্ববিদ্যালয়ের অনাবাসিক শিক্ষার্থীরা সারা দিনের ক্যাম্পাসের ক্লান্তি  শেষে বাসে উঠতে গিয়ে  শিক্ষার্থীদের নামতে হয় আরেক যুদ্ধে।  কার আগে কে বাসে উঠতে পারে, বাসে উঠার পর শুরু হয় সিট দখলের প্রতিযোগিতা। সিট না পেয়ে দাড়াঁনোর জায়গা নিশ্চিত করতেও উঠতে হয় আগেভাগে। প্রায়ই পা ফেলার জায়গাটুকুর জন্য পোড়াতে হয় অনেক কাঠখড়। কখনো সে সুযোগটাও জোটে না অনেকের ভাগ্যে। ক্যাম্পাসের গোল চত্বর থেকে অগত্য হেঁটেই যেতে হয় এক মাইল পথ। টমটম ও রিকশা পেতেও পড়তে হয় বিড়ম্বনায়। এভাবেই ক্যাম্পাস থেকে বাসায় ফিরতে বিড়ম্বনার শিকার হয় ছাত্র-ছাত্রীরা। শাবিপ্রবিতে প্রতি বছর বিভাগ ও ছাত্র-ছাত্রী বাড়ছে কিন্তু বাড়ছে না আবাসিক হল ও পরিবহন বাস।  ১১ হাজার ছাত্র-ছাত্রীর জন্য বিআরটিসির ভাড়া করা ৮টি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪টি বাস অপ্রতুল। অধিকাংশ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের বাস বন্ধ থাকে।  পরিবহন সমস্যা থাকায়  বিগত সময়ে বাসে উঠা নিয়ে সংঘর্ষও হয়েছে। ৩টি হলে মাত্র আবাসিক সুবিধা পান প্রায় ১৪শ শিক্ষার্থী। হলে সিট পেতে  হলে আবার নানা বেগ পোহাতে হয়। আবাসিক সমস্যা প্রকট থাকায় শহরে থাকতে হয় প্রায় ৮৬ ভাগ শিক্ষার্থীকে। এজন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসে যাতায়াত করতে হয় শিক্ষার্থীদের। সিলেট শহরের প্রত্যেক এলাকায় শিক্ষার্থীরা মেস বা বাসা নিয়ে থাকলেও সব জায়গায় যায় না বিশ্ববিদ্যালয়ের বাস। এজন্য ভোগান্তি পোহতে হয় তাদেরকে। বিড়ম্বনা শাবিপ্রবির শিক্ষার্থীদের নিত্যদিনের সঙ্গী।

1 টি মন্তব্য: