শুক্রবার, ২২ জুলাই, ২০১১

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় : ডিজিটাল ক্যাম্পাসে আড্ডাই স্টাডির প্রেরণা

তামিম মজিদ
সিলেটনিউজ২৪.কম



দেশের প্রায় সকল বিশ্ববিদ্যালয়ে চলে শিক্ষার্থীদের ভিন্ন রকম আড্ডা। আড্ডা ক্যাম্পাসের একটি পরিচিত নাম। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস আছে, আর আড্ডা থাকবে না এটাতো কল্পনাই করা যায়না। অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের আড্ডা আর শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের আড্ডা ভিন্ন রকম। ডিজিটাল ক্যাম্পাসে আমাদের আড্ডা অন্যরকম।
 আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে শুরু থেকেই সেমিস্টার পদ্ধতি চালু থাকায় শিক্ষার্থীদের পড়ালেখার চাপটা অনেকটা বেশী। তাই বেশীর ভাগ আড্ডার বিষয় হতে হয় পড়ালেখা কেন্দীক। তাই শাবিপ্রবিতে শিক্ষার্থীদের আড্ডা  মানেই স্টাডি করা। আড্ডাই স্টাডির প্রেরণা। আড্ডাই ক্যাম্পাসের প্রাণ। এখানে ল্যাপটপ নিয়েই আড্ডা চলে বেশী। ক্যাম্পাসের সবর্ত্র ওয়াইফাই সুবিধা থাকায় ল্যাপটপ নিয়ে চলে গ্র“প ভিত্তিক আড্ডা ।
 আড্ডায় শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন রকমের বই,জার্নাল ফ্রি ডাইনলোড করে স্টাডি করে। আর ফাকেঁ কিছু সময় পেলেই ফেইসবুক এবং অনলাইন পত্রিকা পড়ে সময় কাটায়। ডিজিটাল ক্যাম্পাসের সকল আবাসিক হল, একাডেমিক ভবন ও ক্যাম্পাসের সবর্ত্র  ফ্রি  ওয়াইফাই সুবিধা আছেতো আর তাই বই, জার্নাল ডাউনলোড ও ফেইসবুক ব্যবহার করবে না এটাতো হতেই পারে না। আর এই আড্ডার মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা অনেক নতুন জ্ঞান লাভ করে। আবার আড্ডার মাধ্যমে অনেকের মধ্যে নতুন সম্পর্ক গড়ে উঠে। গড়ে উঠে বন্ধুত্বের বন্ধন।
বিশ্ববিদ্যালয় উচ্চ শিক্ষা, গবেষণা ও মুক্ত বুদ্ধি চর্চার প্রাণ কেন্দ্র। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা শুধু শ্রেণীকক্ষ বা গবেষণা কেন্দ্রিক নয়। শ্রেণীকক্ষ বা গবেষণার বাইরেও রয়েছে শিক্ষা অর্জন ও মুক্তি বুদ্ধি চর্চার অনেক মাধ্যম। আড্ডার মাঝে একজন শিক্ষার্থী খুজেঁ পায় নতুন জ্ঞান। আর এই আড্ডাটা অবশ্যই হওয়া চাই সৃজনশীল,যার মধ্যে থাকবে শিক্ষামূলক,বিনোদনমূলক কিছু বিষয়বস্তু,যা শিক্ষার্থীদের মনের খোরাক যোগাবে। এর মধ্যে উঠে আসে কিভাবে স্টাডি করলে ভাল রেজাল্ট করা যায়। আর ভাল ক্যারিয়ার গড়ার চিন্তা ভাবনাতো আছেই।
এছাড়া আড্ডায় ব্যক্তিগত , পারিবারিক, দেশের রাজনীতি ও সমসাময়িক আন্তর্জাতিক বিষয় গুলো ফুটে উঠে। অর্থনীতি বিভাগের ৩য় বর্ষ ২য় সেমিস্টারের আড্ডাবাজ দীপান্নিতা,বাধঁন,মাজহারুল,সাঈদা,পাপিয়া,বদরুল,কান্তা,মুস্তাফিজ ও সমাজকর্ম বিভাগের ৩য় বর্ষ ২য় সেমিস্টারের মিঠুন, ঔশী, তুলি, মাশকুরা, তান্নি ও জয়ন্ত বলেন,আড্ডা ছাড়া ক্যাম্পাসে ভালোই লাগে না। আড্ডার মধ্যে অনেক জ্ঞান লাভ করা যায়। গ্র“প ভিত্কি আড্ডা অনেক জটিল প্রশ্নের সমাধান করা যায়।
প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অপার লীলা ভূমি আধ্মাতিক নগরী সিলেটে অবস্থিত দেশের প্রথম বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক থেকে ক্যাম্পাসের দূরত্ব প্রায় দেড় কিলোমিটার। ফটক দিয়ে  ঢুকলেই চোখে পড়বে রাস্তার দু’পাশে সারি সারি  মেহগণি,জারুল,কড়ই,নারকেলসহ শতাধিক প্রজাতির গাছের নয়াভিরাম দৃশ্য। রাস্তার দু’পাশে নজরকাড়া বৃক্ষ সুশোভিত সুদীর্ঘ লেকটি। লেকের অপূর্ব নীল জলরাশিতে নানা প্রজাতির মাছ যেকোন পথিককে বিমোহীত করে।
প্রধান ফটক থেকে প্রথমেই রাস্তা ডান পাশে রয়েছে শিক্ষক-কর্মকর্তাদের ডরমিটারি এরপর গেস্ট হাউস আইস চ্যান্সেলর’স বাংলো। একটু সামনে বাম পাশে গেলেই ইউনভার্সিটি স্কুল। তার পর চোখে পড়বে  দৃষ্টি নন্দন কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ। সামনে গেলে গোল চত্বর,প্রশাসনিক ভবন, প্রেম চত্বর, সেন্টাল লাইব্রেরী ভবন, অর্জুন তলা ও সকল একাডেমিক ভবন। এ  বিল্ডিংয়ের পাশেই রয়েছে নির্মিতব্য মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি ভাস্কর্য।

ক্যাম্পাসে আড্ডার স্পট, ক্যাম্পাসে মূলত আড্ডা বেশী হয়ে থাকে গোল চত্বর, প্রেম চত্বর, অর্জুন তলা, লাইব্রেরী ভবনের পাশ, ডি বিল্ডিং ও ই বিল্ডিং পেছনের দিক, শহীদ মিনার,ছাত্রী হলের পাশের টিলা ও সেন্টাল অডিটোরিয়াম। ক্যাম্পাসে এসব স্থানেই আড্ডা বেশী হয়ে থাকে। গ্র“প ভিত্তিক ল্যাপটপ নিয়ে আড্ডা চলে লাইব্রেরী ভবনের সামনে,অর্জুন তলা, ডি বিল্ডিং ও এ বিল্ডিংয়ের পাশে। লাইবেরী ভবনের ডান পাশে সংস্কৃতি কর্মীরা বেশী আড্ডা দিয়ে থাকে। আর প্রেমীক যুগলরা প্রেম চত্বর, শহীদ মিনার, ছাত্রী হলের পাশের টিলা ও সেন্টাল অডিটোরিয়ামের পাশে আড্ডা দিতে বেশী পছন্দ করে।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন