বৃহস্পতিবার, ২৮ জুলাই, ২০১১

মুক্তিযুদ্ধের ভাস্কর্য ‘চেতনা ৭১’

বৃহস্পতি, ২৮ জুলাই ২০১১, ১৩ শ্রাবণ ১৪১৮




শাহজালাল বিজ্ঞান ও
প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়
সিলেটবাসীর দীর্ঘ আন্দোলন-সংগ্রামের ফসল দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের উচ্চশিক্ষার সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়। ১৯৯১ সালে যাত্রা শুরু করে এই বিশ্ববিদ্যালয়। ক্যাম্পাসে মুক্তিযুদ্ধের চেতানাকে ধারণ করে রাখতে ভাস্কর্য নির্মাণ করার জন্য প্রগতিশীল ও মুক্ত চর্চায় বিশ্বাসী শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের  প্রাণের দাবী ছিল দীর্ঘদিনের। কিন্তু নানা বাধাবিপত্তির কারণে আর সে স্বপ্ন পূরণ হয়নি। দেশের সকল বিশ্ববিদ্যালয়ে মুক্তিযুদ্ধের ভাস্কর্য থাকলেও ছিল না শুধু শাবিপ্রবিতে। তাই শিক্ষার্থীদের সে স্বপ্নকে পূরণ করতে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী বর্তমান বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন প্রায় দেড় বছর পূর্বে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৪৯তম সিন্ডিকেট সভায় ভাস্কর্য নির্মাণের ব্যাপারে অনুমোদন দেয়। কিন্তু দীর্ঘদিন পেরিয়ে গেলেও প্রশাসন আজও নির্মাণ করতে পারেনি মুক্তিযুদ্ধের ভাস্কর্য। আর তাই  প্রশাসনের  কাজের মন্থর গতি দেখে শিক্ষার্থীরা নিজেরাই উদ্যোগ নেয় পকেট থেকে টাকা তুলে ভাস্কর্য নির্মাণ করার। তাদের সেই সিদ্ধান্তটি আজ বাস্তব হতে চলছে।
দীর্ঘ সময় অতিক্রান্ত হলেও ধৈর্য্যের সাথে এগুতে থাকে বাস্তব স্বপ্নটি। প্রশাসন কথা রাখেনি, শিক্ষার্থীরা নিজেরাই সেই অমোঘ স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিতে প্রথমে একাডেমিক ভবন-এর পাশে ‘চেতনা-৭১’ নামের একটি অস্থায়ী প্রতীকী ভাস্কর্য স্থাপন করে। শিক্ষার্থীদের সেই দাবীকে হারিয়ে যেতে দেয়নি ২০০৫/০৬ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীরা। এ কাজের জন্য (২০০৫-০৬) সেশনের উদ্যোগের পাশাপাশি অর্থায়ন করেছে প্রথম ব্যাচের প্রাক্তন শিক্ষার্থীরাও। এছাড়া ডাচ-বাংলা ব্যাংকও অর্থায়ন করেছে। প্রায় ৬ লক্ষ টাকা ব্যয়ে এ বিল্ডিংয়ের উত্তর পার্শ্বে চেতনা ৭১ নামের ভাস্কর্যটি নির্মিত হচ্ছে। আগামী ২৮ জুলাই ভাস্কর্যটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হবে বলে জানা গেছে।
ভাস্কর্যের বর্ণনাঃ  নির্মিতব্য ভাস্কর্যটির নকশা করেছেন স্থপতি নৃপল খান। আর নির্মাণ কাজে নিয়োজিত আছে তারই সংগঠন ‘নৃ’ এর স্কুল অব স্কাল্পচার। ভাস্কর্যটিতে বর্তমান সময়ের শিক্ষার্থীদের আদলে ব্যবহার করা হয়েছে। পোশাক ও আনুষঙ্গিক উপকরণও বর্তমান সময়ের। মডেলে ছাত্রের হাতে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা উঁচুতে তুলে ধরার ভঙ্গিমা এবং ছাত্রীর হাতে বই, যা বাংলাদেশের সংবিধানের প্রতীক নির্দেশ করে। খরচের চেয়ে ভাস্কর্যের সৌন্দর্যের দিকে গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। একাডেমিক ভবনগুলোর সঙ্গে মিল রেখে বেদির নিচের প্লট ৩টা বানানো হবে সিরামিক ইট দিয়ে। এর মধ্যে নিচের প্লেটটার ব্যাস হবে ১৫ ফুট, মাঝের প্লেটের ব্যাস সাড়ে ১৩ ফুট এবং উপরের প্লেট হবে ১২ ফুট। প্রত্যেকটি আবার ১০ ইঞ্চি করে উঁচু হবে। প্লেট ৩ টার উপরে মূল বেদিটি হবে ৪ ফুট উঁচু, তার উপরে ৮ ফুট উঁচু ফিগার। মুক্তবুদ্ধি চর্চায় উদ্বুদ্ধ শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের প্রাণের দাবী এখন বাস্তব অঙ্কুরোদগমের দিকে। ভাস্কর্যটির শুভ উদ্বোধন করার মাধ্যমে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে জন্ম নিবে এক নব ইতিহাসের।
http://new.ittefaq.com.bd/news/view/31195/2011-07-28/21

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন