তামিম মজিদ,শাবি:
দুটি পাতা একটি কুড়ির দেশ পাহাড়ি সমতলের পাদদেশে অবস্থিত দেশের অন্যতম ঐতিহ্যবাহী বিদ্যাপিঠ সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়। প্রকৃতির অপরুপ সৌন্দের্যে নয়নাভিরাম ক্যাম্পাস। শতশত প্রজাতির হাজার হাজার বৃক্ষ ক্যাম্পাসের সৌন্দর্যকে গভীর ভাবে ফুটিয়ে তোলেছে। এখানকার মেধাবী ছাত্রছাত্রীদের সাথে প্রকৃতির রয়েছে নিবিড় সম্পর্ক। বিশেষ করে ছবির মতো সারি সারি বৃক্ষে সাজানো শিল্পীর অনুপম চিত্রে এখানকার ভোর হয় এক ফসলা শিশিরের নিখুত ছোয়াঁয়। ভোর বেলায় পাখির কলতানে ঘুম ভাঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হল গুলোর ছাত্রছাত্রীদের । ক্যাম্পাসের মনোরম দৃশ্য অবলোকন করলে ক্লান্ত পথিকের শরীর মন জুড়িয়ে যায় আবহমান বাংলার রুপ রুপান্তরে । হাজারো বুক্ষের সমারোহ আপন মহিমায় ভাস্বর হয়ে আছে মনমুগ্ধোকর চিরচেনা সেই ক্যাম্পাস।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রবেশ পথ প্রধান ফটক দিয়ে ঢুকতে গেলেই প্রথমে মুগ্ধ হতে হয় বিধাতার নির্দেশে দাড়িঁয়ে থাকা সারি সারি বৃক্ষ দেখে। এই ক্যাম্পাসের সৌন্দর্যকে গভীর ভাবে ফুটিয়ে তুলেছে নানান প্রজাতির বৃক্ষ গুলো। মেইন গেইট থেকে গোল চত্বর,একাডেমিক ভবন,সিরাজুন্নেসা চৌধুরী হল, ১ম ছাত্রী হল,সেন্টাল অডিটোরিয়াম, শাহপরাণ হল, সৈয়দ মুজতবা আলী হল, ২য় ছাত্র হলসহ ক্যাম্পাসের প্রত্যেকটি রাস্তার দু’পাশে রয়েছে বৃক্ষ । শহীদ মিনারের টিলা ও পার্শ্ববর্তী টিলাগুলোর গাছ দেখলে যে কোন পথিকের মন ছুয়েঁ যায়। সমস্ত ক্যাম্পাস ঘুরলে দেখা যায়,প্রশাসনিক ভবন,আবাসিক হল,ভিসির বাংলো,ডরমিটারি,টিচার্স কোয়াটার,শহীদ মিনার, পাহাড়ের টিলাসহ ক্যাম্পাসের সবর্ত্র রয়েছে বিভিন্ন ধরনের অসংখ্য প্রজাতির বৃক্ষ। কি নেই তাতে ? জাম,জামরুল, কদবেল, আতাঁ, কাঠাঁল, নারিকেল,আরো আছে জারুল,চাপাতি,শিমুল,হরতকি,অর্জুন,নাগেশ্বরসহ বনজ,ফলজ,ঔষধি হরেক রকমের গাছ। মায়ামাখা স্বপ্নকে বাস্তবে পরিণত করতে ক্যাম্পাসকে সাজানো হয়েছে প্রকৃতির বর্ণিল সাজে। এসব গাছের নিচে শিক্ষার্থীদের নিয়মিত চলে গ্রুপ স্টাডি, আড্ডা আর প্রেমিক প্রেমিকাদের বিচরণ। ছাত্রী হলের পাশের টিলা আর শহীদ মিনারের পার্শ্বের টিলার বৃক্ষের নিচে হরহামেশা জুটিদের বিচরণ করতে দেখা যায়। হলের আশ পাশ এলাকায় বৃক্ষের নিচে বসে প্রিয়জনের সানিধ্য পেতে একটুও কার্পণ্য করে না ছাত্রী হলের আবাসিক শিক্ষার্থীরা। গাছের নিচে বসে শুনায় মনের কথা। আর ক্যাম্পাসে ক্লাসের ফাকেঁ একটু সময় পেলেই প্রকৃতির নিচে বসে সময় কাটায় শিক্ষার্থীরা।
শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩২০ একর জমির কোথাও পরিত্যক্ত জমি নেই । কোথাও রোপন করা হয়েছে ধান,কোথাও মৌসুমি সবজি,কোথাও ফলের বৃক্ষ আবার কোথাও লাগানো হয়েছে ঔষধি প্রজাতির গাছ। প্রতি বছর বিভিন্ন প্রজাতির চারা রোপনের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের বাজেটে নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ বরাদ্দ দেয়া হয়। প্রশাসনের উদ্দ্যোগে প্রতি বছর কয়েক হাজার চারা রোপন করা হয়। বৃক্ষ রোপন ও গাছ পরিচর্যার সার্বিক তত্বাবধান করে বিশ্ববিদ্যালয়ের বন ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগ । বৃক্ষ রোপন ও ক্যাম্পাসে বনায়নের জন্য শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয় ২ বার জাতীয় পদক পেয়েছে। সর্ব শেষ ২০০৯ সালে শাবি জাতীয় বৃক্ষ রোপন পদক লাভ করে।
http://bangladeshbarta.com/2011/08/05/%E0%A6%B6%E0%A6%BE%E0%A6%B9%E0%A6%9C%E0%A6%BE%E0%A6%B2%E0%A6%BE%E0%A6%B2-%E0%A6%AC%E0%A6%BF%E0%A6%9C%E0%A7%8D%E0%A6%9E%E0%A6%BE%E0%A6%A8-%E0%A6%93-%E0%A6%AA%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A6%AF%E0%A7%81-3/
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন